নাতাঞ্জে বিস্ফোরণ: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি বিমান হামলা

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার ঢেউ আরও জোরালো হলো, যখন ইসরায়েল বুধবার রাতে ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। বহুবার আলোচিত এই পারমাণবিক কেন্দ্র আবারও হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো, আর তাতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা আরও গভীর হলো।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, হামলার লক্ষ্য ছিল এমন একটি স্থাপনা, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত উপকরণ ও যন্ত্রাংশ সংরক্ষিত ছিল। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই প্রকল্প ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিতে সহায়ক ছিল।

আগেও ছিল হামলার লক্ষ্য
নাতাঞ্জ শহরের এই কেন্দ্রে এর আগেও একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১৪ জুন সংঘাতের সূচনালগ্নে একটি বড় ধরনের হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ জেনারেল নিহত হন।

তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থাপনাটি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মূল কেন্দ্র। ভূগর্ভস্থ অংশ সুরক্ষিত থাকলেও, ভূমির ওপরের স্থাপনাগুলো এবারের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইরান সরকার।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, হামলার পর তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে, তবে ভূগর্ভস্থ সেন্ট্রিফিউজগুলোর কিছু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েল বারবার অভিযোগ করে আসছে, ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ এমন স্তরে নিয়ে গেছে, যা শান্তিপূর্ণ নয় বরং অস্ত্র তৈরির পথেই ব্যবহৃত হতে পারে।

অন্যদিকে, ইরান জোর দিয়ে বলছে যে, তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং ইসরায়েলি হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলেই মনে করছে। দেশটি IAEA-এর ৩৫ জাতির বোর্ডের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

পারমাণবিক কেন্দ্রে অতীত ও বর্তমান
২০০২ সালে প্রথমবার নাতাঞ্জের অস্তিত্ব আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ্যে আসে। কেন্দ্রটিতে দুটি প্রধান সমৃদ্ধকরণ ইউনিট রয়েছে, যেখানে প্রায় ৭০টি সেন্ট্রিফিউজের সারি স্থাপিত। বাংকারযুক্ত এই কেন্দ্র আগেও ২০২১ সালে একবার বড় ধরনের হামলার শিকার হয়েছিল।

Scroll to Top