খান মোহাম্মদ নুরুল হুদা (জন্ম: ৩০ এপ্রিল ১৯৪৮) বাংলাদেশের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাবেক সচিব ও ১২তম প্রধান নির্বাচন কমিশনার (২০১৭–২০২২)। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
নুরুল হুদার জন্ম পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার নোয়ামালা গ্রামে। তিনি পটুয়াখালীতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে জন প্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
প্রশাসনিক জীবন
১৯৭৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (BCS) যোগ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর ও ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় এবং জেলা প্রশাসক হিসেবে ফরিদপুর ও কুমিল্লায় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সংসদ সচিবালয় ও পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি সচিব পদে ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি লাভ করেন।
২০১০ সালে বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (BMDF)-এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এছাড়া তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেমকন গ্রুপে পরিচালক, নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জোন কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (২০১৭–২০২২)
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তার মেয়াদ ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিল। তার অধীনেই ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন থেকে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
মন্তব্য ও সমালোচনা
২০২০ সালে এক অনুষ্ঠানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ৪–৫ দিনে ভোট গুনতে পারে না, আমরা ৪–৫ মিনিটে গুনে ফেলি”— যা সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরস ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
ব্যক্তিগত জীবন
তার স্ত্রীর নাম হুসনে আরা, এবং তাদের তিন সন্তান রয়েছে।