ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণাটিও এখন একটি কৌশলগত কৌশল বলেই বিবেচিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে যেমন তার কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরছেন, বাস্তবতা বলছে, দুপক্ষই এখন ‘শেষ মুহূর্তের খেলা’ খেলছে, যার মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষকে চাপের মধ্যে রাখা এবং আত্মরক্ষার অবস্থান বজায় রাখা।
🔥 সাম্প্রতিক হামলা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া:
- মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েল তেহরানের ফেরদৌসি ও ভালি আসর এলাকায় হামলা চালায়।
- এতে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী সেদিঘি সাবের নিহত হন—এটি কেবল সামরিক নয়, মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরির কৌশল।
- ইরান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়—যেখানে ৩ জন নিহত এবং বহুজন আহত হয়েছেন।
- ইসরায়েলজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয় এবং জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
🕊️ যুদ্ধবিরতি নাকি কৌশলগত বিরতি?
- ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ঘোষণা দেন, ইসরায়েল যদি ভোর ৪টার পর হামলা না করে, তবে আমরাও জবাব দেব না।
- এই ঘোষণাকে অনেকে শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব হিসেবে দেখলেও, অনেকের কাছে এটি ছিল শেষ হুঁশিয়ারি।
❗ কূটনৈতিক ঘোষণা বনাম ময়দানের বাস্তবতা:
- ২১ জুন যুক্তরাষ্ট্র ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ চালিয়ে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা করে।
- এরপর কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায় ইরান।
- ট্রাম্পের দাবি—ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত। কিন্তু ইরান তা অস্বীকার করে।
🕵️ বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি:
ইসরায়েলি বিশ্লেষক আকিভা এলদার বলেন:
“এই যুদ্ধবিরতি বাস্তবতা নয়, বরং মর্যাদা রক্ষার প্রতিযোগিতা। কেউই হার স্বীকার করতে রাজি নয়। এটা অনেকটা গাজা বা লেবাননের যুদ্ধবিরতির মতো—শেষ মুহূর্তে সমতা বজায় রেখে সংঘর্ষের ইতি টানার কৌশল।”
তিনি আরও বলেন, “এখনও সবাই চাইছে শেষ পর্যন্ত নিজেদের শক্তিশালী দেখাতে। এই ‘শেষ খেলা’য় কে জয়ী হবে, তা নির্ধারণ করবে কূটনৈতিক ও সামরিক চাপের ভারসাম্য।”