আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কঠোর আর্থিক ও রাজস্ব নীতি, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা এবং ব্যাংক খাতের চাপ—এই চার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও দুর্বল অবস্থায় রয়েছে।
তবে এমন সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় পাচ্ছে। সোমবার (২৪ জুন) রাতে আইএমএফ বোর্ড সভায় এ দুটি কিস্তির মোট ১৩৭ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়ের সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামীকাল ২৬ জুন এই অর্থ বাংলাদেশের রিজার্ভে জমা হবে।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রভাব
আইএমএফ বলছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতনের ফলে অর্থনীতি আরও চ্যালেঞ্জে পড়ে। পরে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে স্থিতিশীলতা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নেয়।
তবে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এখনও বিনিয়োগ ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আইএমএফের সতর্ক বার্তা ও পরামর্শ
সংস্থাটি আরও বলেছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে ৩.৮ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরে ৫.৪ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে তারা।
তবে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে আইএমএফ:
- কঠোর মুদ্রানীতি বজায় রাখা
- নমনীয় বিনিময় হার অব্যাহত রাখা
- রাজস্ব আহরণ বাড়ানো
- ভর্তুকি ধাপে ধাপে হ্রাস
- ব্যাংক খাত সংস্কারে নতুন আইন বাস্তবায়ন
- ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা
বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের চাপ ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশল গ্রহণ জরুরি বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
উন্নয়নের পথে কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য
আইএমএফ জানিয়েছে, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হতে চাইলে বাংলাদেশকে রপ্তানি খাত বৈচিত্র্য, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, সুশাসন এবং তথ্যের মান উন্নয়নে নজর দিতে হবে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া ঋণের পরিমাণ
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে সাড়ে তিন বছরের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। এর আওতায় এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। নতুন করে আরও ১৩৭ কোটি ডলার ছাড়ের অনুমোদন পেল।