কাতারের মার্কিন ঘাঁটি আল-উদেইদে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে তখন শুরু হয় টানটান কূটনৈতিক তৎপরতা, দফায় দফায় বৈঠক। সিএনএনের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই যুদ্ধবিরতির নেপথ্য কাহিনি।
সমন্বিত কূটনৈতিক তৎপরতা
জানা গেছে, যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে ট্রাম্প সরাসরি ফোনে কথা বলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে। একই সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইরানের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যোগাযোগে ছিলেন। কাতার ছিল মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায়।
ট্রাম্প কাতারের আমির শেখ তামিমকে ফোন দিয়ে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছে; এখন ইরানকে রাজি করাতে কাতারের সহায়তা দরকার। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ হয়। এরপর ইরান ও কাতারের মধ্যে একাধিক ফোনালাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে।
দুই পক্ষের সমান্তরাল সাড়া
ট্রাম্প পরে ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “ইরান ও ইসরায়েল প্রায় একই সময়ে জানায় তারা শান্তি চায়। আমি জানতাম, এটাই সঠিক সময়।” তিনি এটিকে মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের বিজয় বলে অভিহিত করেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের পাল্টা জবাব দেওয়ার পরেই শত্রু পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চালানো হয়েছে, তবে এখন শান্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ভবিষ্যৎ সংলাপের ইঙ্গিত
সিএনএনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, ইরানের পাল্টা হামলার মাধ্যমে একধরনের ভারসাম্য তৈরি হয়, যা তেহরানকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনার পথ প্রশস্ত করে। এমনকি যুদ্ধ চলাকালীন সময়েও ইরান–যুক্তরাষ্ট্র বারবার বার্তা আদান-প্রদান করেছে। একটি সময় তুরস্কে ট্রাম্প ও ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে সরাসরি বৈঠকের চেষ্টাও হয়, যদিও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
শেষ কথা
হোয়াইট হাউসের মতে, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন হামলাই ছিল যুদ্ধবিরতির মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। তবে বাস্তবতায়, কূটনৈতিক বার্তালাপ ও কাতারের সক্রিয় মধ্যস্থতাই এই সংঘাতের সমাপ্তি টেনেছে।