ভোলা থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়া ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার মরদেহ চার দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। মেঘনা নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধারের পর সামাজিক মাধ্যমে চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ছাত্রদল দাবি করেছে, ইপ্সিতাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার সত্য উদ্ঘাটন ও দোষীদের বিচারের দাবিতে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এতে বলা হয়, ইপ্সিতা লঞ্চের তৃতীয় তলা থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। একটি নারী কণ্ঠ ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে জানায়, ধর্ষণের শিকার হয়ে ইপ্সিতা আত্মহত্যা করেছেন। পরে পুলিশ কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে দুই স্টাফ ও অভিযোগকারী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইপ্সিতার পরিবার জানায়, ১৭ জুন সকালে প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন ইপ্সিতা। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর মা বলেন,
“ও কবে কোথায় যেত, কার সঙ্গে কথা বলত, আমাদের সব জানানো হতো। কোনো ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক বা বিরক্তির কথা কখনো বলেনি।”
ঘটনার পর ভোলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদল মানববন্ধন করে। তাঁরা অভিযোগ করেন, সামাজিক মাধ্যমে ইপ্সিতাকে নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করা হচ্ছে এবং ঘটনাটিকে আড়াল করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, ইলিশা ঘাট থেকে ছেড়ে আসার কিছুক্ষণ পর ইপ্সিতা হঠাৎ নদীতে ঝাঁপ দেন। লাইফবয়া ফেলে উদ্ধার চেষ্টা চালানো হলেও ব্যর্থ হন লঞ্চ কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, নৌপুলিশ বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছে।
প্রসঙ্গত,
ইপ্সিতা ভোলা সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি কোনো পদে না থাকলেও ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অভিযোগ করেছে, এক ছাত্রদল নেতার হুমকির শিকার ছিলেন ইপ্সিতা, এবং সেই সূত্র ধরেই এ ঘটনা ঘটতে পারে।
মরদেহ উদ্ধারের পর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে জোরালো আহ্বান জানিয়েছে পরিবার ও ছাত্রদল।
সামাজিক মাধ্যমে অনেকে ঘটনাটিকে “পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড” বলেও অভিহিত করেছেন।