ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিনজিরা সড়ক সংস্কার প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার, স্যুয়ারেজ লাইন না করা, বালুর পরিবর্তে পলিথিন বিছানোসহ নানা অনিয়মে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন—এ প্রকল্প থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা লোপাট হতে পারে।
🏗 প্রকল্পের পটভূমি
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৩৪ মিটার দীর্ঘ সড়ক মেরামতের অনুমোদন দেওয়া হয় দুই বছর আগে। কাজটি প্রথমে পায় কিংডম নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যাদের হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের কাজ শুরু করেন। তবে ৫ আগস্টের পর এ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ নেয় ঢাকা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকাররম হোসেন সাজ্জাদের নেতৃত্বাধীন বিএনপির একটি সিন্ডিকেট।
⚠ অনিয়মের অভিযোগ
স্থানীয়দের অভিযোগ—
- পুরোনো ইট, পাথর, মাটি ও আবর্জনা গুঁড়ো করে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে
- বালু না দিয়ে পলিথিন বিছিয়ে নতুন ঢালাই দেওয়া হয়েছে
- ৫৩৪ মিটারের মধ্যে প্রায় ৮৪ মিটার সড়কে স্যুয়ারেজ লাইন ছাড়াই ঢালাই দেওয়া হয়েছে
এলাকার বাসিন্দা মারুফ হোসেন বলেন—
“দুই বছর ধরে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। অথচ এর পাশে মডেল থানা, স্কুল-কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অনিয়মের দ্রুত সমাধান চাই।”
🗣 ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবস্থান
সাব-কন্ট্রাক্টর বিএনপি নেতা মোকাররম হোসেন সাজ্জাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“প্রথমে সিসি ঢালাই, পরে আরসিসি ঢালাই দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা হয়তো কিছু পুরোনো ইট-পাথর ব্যবহার করেছে। আমরা নতুন ব্যবসায়ী, একটু সময় দিন।”
কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অনিয়মের ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান,
“অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।”
সহকারী উপজেলা প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন,
“বিএনপি নেতারা প্রকৌশলী অফিসকে না জানিয়ে কাজ চালাচ্ছিল। নির্দেশনা না মানায় আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।”
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া বর্তমানে চিকিৎসাধীন থাকায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।