ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়ে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি: যুক্তরাষ্ট্র যেন আগুনে ঘি না ঢালে

ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কো সতর্ক করে বলেছে, ওয়াশিংটনের যেকোনো সামরিক ভূমিকা এই অঞ্চলে আরও অস্থিরতা তৈরি করবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন,

“ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে মার্কিন হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে ভয়াবহ এক উত্তেজনার দিকে ঠেলে দিতে পারে।”

রাশিয়া-ইরান সম্পর্ক ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান
সম্প্রতি রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুই দেশ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে মস্কো তেহরানকে আরও কাছের মিত্রে পরিণত করতে চাইছে।

এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত ইরানি ‘শাহেদ ড্রোন’ রাশিয়াকে সরবরাহ করেছে ইরান। এর ফলে পশ্চিমাদের চোখে এই মিত্রতা আরও গুরুত্ব পেয়েছে।

রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন,

“ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেওয়া পুরো পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।”

সংঘাতের সাম্প্রতিক রূপ
গত ১২ জুন রাতে ইসরায়েল ইরানে বড় ধরনের হামলা চালায়, যেটি ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে পরিচিত। এতে তেহরানসহ বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু কেন্দ্র এবং আবাসিক ভবন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এই হামলায় নিহত হন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি, কমান্ডার গোলাম আলি রাশিদ এবং ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী।

জবাবে ইরান শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস–৩’। ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা পেরিয়ে কয়েকটি কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। হতাহতের সংখ্যা কম হলেও ইসরায়েল বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে।

বর্তমানে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বহু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মহল সংঘাত আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা করছে।

Scroll to Top