নাহিদ ইসলামের নামে ছড়ানো ‘টাকা উদ্ধারের’ ভিডিও ভুয়া, প্রকৃত ঘটনা বান্দরবানে

সম্প্রতি একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বাড়ির পুকুর থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও ভিডিওটি বেশ কিছু ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে বিষয়টিকে সত্য হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে এটি একটি বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা প্রচারণা।

ভাইরাল ভিডিও ও বিভ্রান্তি
১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পোশাক পরা কয়েকজন ব্যক্তি একটি ব্যাগ থেকে টাকা বের করছেন। ভিডিওটির বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, এটি নাহিদ ইসলামের গ্রামের বাড়ির পুকুরে পাওয়া টাকা। এই দাবির সঙ্গে ফেসবুক পেজ “Voiceof Ekattor” ও “বিএনপি সাংবাদিক” সহ অনেক অ্যাকাউন্ট ও পেজ একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়।

ভিডিওটির মূল উৎস কী?
তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, ভিডিওটির সঙ্গে নাহিদ ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। ভিডিওর কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায়, এটি ১৮ মে “Shahadat Hossain” নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে প্রথম পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এটি বান্দরবানের লামা উপজেলায় ডাকাতি হওয়া একটি টোব্যাকো কোম্পানির টাকা উদ্ধারের ঘটনা।

এমনকি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ১৭ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে লামা থানা পুলিশের ওই অভিযানের বিস্তারিত বিবরণসহ একই ছবি পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, লামা উপজেলার লাইনঝিরি এলাকায় ডাকাত দলের মূলহোতা করিমের বাড়ির পাশে গর্ত খুঁড়ে টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের সময় পুলিশ, স্থানীয় জনগণ এবং উদ্ধার হওয়া টাকার ব্যাগ—সবকিছু মিলেই ভাইরাল হওয়া ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।

গুজবের ফলাফল
ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার কারণে ভিডিওটি এখন পর্যন্ত লাখো মানুষ দেখেছে এবং হাজার হাজার বার শেয়ার হয়েছে। অথচ এর কোনো সত্যতা নেই। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুল তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টাই মূল লক্ষ্য বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

সতর্ক বার্তা
এ ধরনের ভিডিও শেয়ার করার আগে অবশ্যই সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। ভুয়া তথ্য প্রচার শুধু ব্যক্তির সম্মানহানি ঘটায় না, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলারও জন্ম দিতে পারে।

উপসংহার:
ভিডিওতে দেখা ঘটনার সঙ্গে নাহিদ ইসলামের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি একেবারেই ভুয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো একটি গুজব। এর প্রকৃত স্থান বান্দরবানের লামা, এবং এটি একটি ডাকাতি হওয়া কোম্পানির টাকা উদ্ধারের ঘটনার ভিডিও।

Scroll to Top