বান্দার হক কী?

📖 কোরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে:

  1. সুরা মুতাফফিফিন (১–৩):

“ধ্বংস তাদের জন্য যারা পরিমাপে কম দেয়।”
➤ এটা শুধু বাণিজ্যে নয়, সব ধরনের অন্যায় সুবিধা নেওয়াকেও বোঝায়।

  1. সহিহ মুসলিম (২৫৮১):

“কে দেউলিয়া জানো? যে নামাজ, রোজা, হজ করে এসেছে, কিন্তু গালি দিয়েছে, কারও অধিকার হরণ করেছে, কারও রক্ত ঝরিয়েছে। তার নেকি ভুক্তভোগীদের দেওয়া হবে, শেষে কিছু না থাকলে অন্যদের গোনাহ তার কাঁধে তুলে দেওয়া হবে।”


🚫 বান্দার হক লঙ্ঘনের ক্ষেত্রসমূহ:

  1. সম্পদের হক: চুরি, সুদ, প্রতারণা, জোরপূর্বক মাল দখল।
  2. সম্মানের হক: গিবত, অপবাদ, হেয় করা।
  3. আচরণের হক: অহংকার, অবিচার, স্বজনপ্রীতি।
  4. সম্পর্কের হক: পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান, প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের অবহেলা।

⚖️ পরিণাম কী?

  • আল্লাহ বান্দার হক ক্ষমা করবেন না যতক্ষণ না ভুক্তভোগী নিজে ক্ষমা করেন।
  • পরকালে বিচার হবে মানুষে-মানুষে।
  • কারও হক নষ্ট করে ইন্তেকাল করলে সে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধী হিসেবে মরবে।

করণীয়:

  1. যার হক নষ্ট করেছি, ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
  2. সৎ আচরণ, সহমর্মিতা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা।
  3. পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিটি সম্পর্কেই ন্যায় ও দায়িত্ববোধ বজায় রাখা।

🌸 উপসংহার:

একজন প্রকৃত মুসলমান শুধু নামাজি নয়, সে অন্যের অধিকাররক্ষায় যত্নবান। হক্কুল্লাহ যেমন ফরজ, হক্কুল ইবাদও তেমনি অপরিহার্য। যদি জান্নাতের আশায় জীবনযাপন করি, তবে মানুষের অধিকার হরণের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া আবশ্যক।

আসুন, আল্লাহর হক যেমন পালন করি, তেমনি তাঁর বান্দার হকও ন্যায়, ভালোবাসা ও দয়ায় আদায় করি।
কারণ, পরকাল শান্তিময় হবে তখনই—যখন মানুষ ও আল্লাহ, উভয়ের হক পূর্ণভাবে আদায় করা হবে।

Scroll to Top