মসজিদ: আল্লাহর পবিত্র স্থান ও মুসলিম সমাজের প্রাণকেন্দ্র

মসজিদ শুধু নামাজের স্থান নয়, বরং মুসলিম সমাজের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, মসজিদগুলোকে সে তার বিশেষ অনুরাগীদের জন্য আবাসস্থল করে—যারা আল্লাহ ও পরকাল বিশ্বাস করে, নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ছাড়া কারও ভয় পায় না (সুরা তওবা: ১৮)।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, “আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মসজিদসমূহ, আর সবচেয়ে অপছন্দের স্থান হলো বাজারসমূহ।” (সহিহ্ মুসলিম: ১৪১৪) এই বাণী আমাদের শেখায়, মসজিদই সর্বোচ্চ পবিত্রতা ও মর্যাদার জায়গা।


মসজিদের ঐতিহাসিক ও সামাজিক গুরুত্ব

ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই মসজিদ ছিল শুধু ইবাদতের স্থান নয়, শিক্ষা, বিচার, পরামর্শ ও নেতৃত্বের কেন্দ্র। হিজরতের প্রথম দিনেই রাসুল (সা.) কুবায় ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। মদিনায় এসে স্থাপন করেন ঐতিহাসিক মসজিদে নববী, যা মুসলমানদের একতা ও সমাজব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

মসজিদে সবার মর্যাদা সমান—গরিব, ধনী, সাদা-কালো সবাই একসাথে দাঁড়িয়ে আল্লাহর পায়ের কাছে মাথা নত করে নামাজ আদায় করে। এটি মুসলিম সমাজে সাম্য ও ঐক্যের প্রতীক।


মসজিদ নির্মাণের সঠিক উদ্দেশ্য ও তার ফলাফল

নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করে দেন।” (সহিহ্ বুখারি: ৪৫০) এখানে পরিষ্কার যে, মসজিদ নির্মাণ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হতে হবে, কোনও ব্যক্তিগত গৌরব, টাকার বড়াই বা অহংকারের জন্য নয়।

এছাড়া মসজিদ নিয়ে অহংকার ও গৌরবের কারণে মানুষের মধ্যে দ্বেষ সৃষ্টি হলে, কেয়ামত আসবে না—নবী (সা.) বলেছেন, “লোকেরা মসজিদ নিয়ে পরস্পর গৌরব ও অহংকারে মেতে না ওঠা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।” (সুনানে আবু দাউদ: ৪৪৯)।


উপসংহার

মসজিদ আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নয়ন ও সামাজিক ঐক্যের অন্যতম ভিত্তি। এজন্য মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা ও তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের সার্থে মসজিদকে আমাদের ভালোবাসা, সম্মান ও যত্ন দিতে হবে।

Scroll to Top