যে কোন মুল্যে মুসলিম বিশ্বের পাশে আছে রাশিয়াঃ পুতিন

রাশিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে মুখ খুললেন পুতিন: ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে জবাবদিহি

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বিমান হামলার পর বিশ্বব্যাপী নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইরান তার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়ার কাছ থেকে প্রত্যাশিত সমর্থন না পাওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠছে—রাশিয়া কেন নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে? অবশেষে এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়ার অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন পুতিন

সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে এক প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন,

“প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বর্তমানে ইসরায়েলে বসবাস করছে। এটি আজ প্রায় একটি রুশভাষী দেশ। নিঃসন্দেহে, আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে আমরা এ বিষয়টি সবসময় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি।”

তিনি আরও জানান, রাশিয়া একদিকে যেমন মুসলিম বিশ্বের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তেমনি ইসরায়েলের সঙ্গেও তার সম্পর্ক বহু পুরনো। রাশিয়ার জনসংখ্যার অন্তত ১৫ শতাংশ মুসলমান—এই বাস্তবতাও তাদের কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সমালোচনার জবাবে ‘উসকানি’র অভিযোগ

রাশিয়ার নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে সমালোচকদের প্রতি পুতিন বলেন,

“এসব বক্তব্য উসকানিমূলক প্রচারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। রাশিয়া সবসময় আরব ও ইসলামি বিশ্বের পাশে থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।”

মার্কিন হামলার প্রেক্ষাপট

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে ইরানের প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো—ফোর্ডো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে হামলা চালায়। এতে ব্যবহৃত হয় ১৪ হাজার কেজির বাংকার-বাস্টার বোমা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটিকে “সামরিক সাফল্যের এক অসাধারণ নজির” বলে মন্তব্য করেন।

এই হামলার জবাবে ইরান সরাসরি ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্পষ্ট জানান,

“আলোচনার পথে আমরা ছিলাম। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সেই পথ বন্ধ করেছে। এখন আমরা আগে প্রতিশোধ নেব, পরে আলোচনা সম্ভব।”

মধ্যস্থতার প্রস্তাব ও প্রত্যাখ্যান

পূর্বে পুতিন ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেন,

“আগে নিজের দেশের অবস্থা সামলান, তারপর অন্যদের নিয়ে ভাবুন।”

Scroll to Top