বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে যখন নানা সংকট ঘিরে ধরছে দেশগুলোকে, তখন বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরলেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, “আমরা আয়তনে ছোট হলেও সক্ষমতায় বড়। ১৭ কোটি মানুষের খাবারের জোগান দিচ্ছি, একইসঙ্গে মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দিয়েছি।”
রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সদর দপ্তরে আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য ফোরামের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান বক্তা হিসেবে এই বক্তব্য দেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, “বিশ্বে ক্ষুধা উৎপাদনের অভাবে নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ব্যর্থতার কারণে টিকে আছে। ২০২৪ সালে বিশ্বের ৬৭ কোটি মানুষ ক্ষুধায় ভুগেছে, অথচ আমরা পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করি—এটা নৈতিকভাবে লজ্জাজনক।”
তিনি তুলনা টেনে বলেন, “যখন ক্ষুধা দূর করতে কয়েক বিলিয়ন ডলার তুলতে হিমশিম খাই, তখন পৃথিবী অস্ত্রে ব্যয় করে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার! এটিই কি উন্নয়ন?”
বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“আমরা এখন সম্পূর্ণ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাল, সবজি ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে। কৃষকেরা আবাদ ঘনত্ব ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন, আর সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “এফএওর ‘নোবেল পিস লরিয়েটস অ্যালায়েন্স ফর ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড পিস’-এর সদস্য হিসেবে আমি গর্বিত। এটি এখন বৈশ্বিক শান্তি ও খাদ্য নিরাপত্তার এক মাইলফলক।”
ড. ইউনূস শেষে আহ্বান জানান,
“ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত ও কার্বনমুক্ত এক ‘থ্রি জিরো’ পৃথিবী গড়তে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ এই বৈশ্বিক যাত্রায় গর্বের অংশীদার হতে চায়।”
