২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে হয়েছে’—এমন অভিযোগে আলোচিত সেই ভোট নিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা নিজেই আদালতের কাছে অনিয়মের কথা স্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
নূরুল হুদা বলেন, ‘তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, প্রশাসন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কিছু অসৎ কর্মকর্তা পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করে। ভোটগ্রহণ হয় রাতেই। ব্যালট বাক্স রাতেই ভর্তি করা হয়।’
তিনি জানান, অনেক কেন্দ্রে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট দেখানো হয়, যা স্বাভাবিক নয়। এমনকি কিছু এলাকায় শতভাগ ভোট পড়ার তথ্য রেজাল্ট শিটে দেখে তিনি হতবাক হন।
গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা
সাবেক সিইসি আরও বলেন, ‘ডিজিএফআই ও এনএসআই কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে আমি পরে বুঝতে পারি।’
তিনি দাবি করেন, এই অনিয়মে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা অবহিত ছিলেন না। দলীয় প্রভাব ও বাহিনীর ছত্রছায়ায় সবকিছু সংঘটিত হয়।
আইনি প্রেক্ষাপট
বিএনপির এক নেতার করা শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় গত ২২ জুন কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তিনি আদালতে দাবি করেন, নির্বাচন বিতর্কিত হলেও দায় নির্বাচন কমিশনের নয়। পরে পুলিশ রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরেই ‘দিনের ভোট রাতে’—বিষয়টি দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এবার সাবেক সিইসির সরাসরি জবানবন্দিতে সে অভিযোগের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলল। এটি বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন আরও জোরালো করল।